দুরপিন মঠ

কালিম্পং-এর অন্যতম বিখ্যাত স্থান হলো দুরপিন মঠ (Durpin Monastery), যা জাং ঢোক পালরি ফোডাং (Zang Dhok Palri Phodang) নামেও পরিচিত। এটি দুরপিন দারা পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত।

দুরপিন মঠের ইতিহাস

দুরপিন মঠ ১৯৫৭ সালে মহান তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্মগুরু দুদজম রিনপোচে (Dudjom Rinpoche) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি তিব্বত থেকে নির্বাসিত হয়ে কালিম্পং-এ এসেছিলেন এবং এটি ধ্যান ও শিক্ষার একটি স্থান হিসেবে গড়ে তোলেন। ১৯৭৬ সালে এই মঠটি স্বয়ং দালাই লামা দ্বারা পবিত্র করা হয়।

এই মঠটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এখানে বৌদ্ধ ধর্মের ১০৮টি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ “কাঙ্গিউর” (Kangyur) সংরক্ষণ করা আছে, যা চীন তিব্বত দখলের পর সেখান থেকে আনা হয়েছিল।

কী কী দেখবেন দুরপিন মঠে?

 * পবিত্র ধর্মগ্রন্থ: মঠের প্রধান আকর্ষণ হলো ১০৮ খণ্ডের “কাঙ্গিউর” সহ অন্যান্য দুর্লভ বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ও পুঁথি।

 * তিব্বতীয় স্থাপত্য: মঠের চমৎকার তিব্বতীয় স্থাপত্য, রঙিন ফ্রেস্কো, intricate দেয়াল চিত্র এবং কাঠ খোদাই করা নকশাগুলি বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষা ও গল্প তুলে ধরে।

 * শান্ত পরিবেশ: মঠের ভেতরের পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত ও নির্মল, যা ধ্যান ও আত্ম-অনুসন্ধানের জন্য উপযুক্ত। সন্ন্যাসীদের মন্ত্রোচ্চারণ এবং ঘন্টাধ্বনি এক আধ্যাত্মিক পরিবেশ তৈরি করে।

 * 360-ডিগ্রি দৃশ্য: দুরপিন দারা পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হওয়ায় এখান থেকে কালিম্পং শহর, বরফে ঢাকা পশ্চিম সিকিমের হিমালয় পর্বতমালা (বিশেষ করে কাঞ্চনজঙ্ঘা), তিস্তা নদী এবং তার উপত্যকার এক মনোরম ৩৬০-ডিগ্রি প্যানোরামিক দৃশ্য দেখা যায়।

 * প্রার্থনার চাকা: এখানে অন্যান্য বৌদ্ধ মঠের মতোই প্রার্থনা চাকা রয়েছে, যা ঘুরিয়ে ভক্তরা প্রার্থনা করেন।

দুরপিন মঠ কেবল একটি উপাসনালয়ই নয়, এটি শান্তি এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। যারা আধ্যাত্মিক শান্তি, ইতিহাস বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এটি কালিম্পং-এর একটি অবশ্য দর্শনীয় স্থান।

Google Maps

কিভাবে এখানে আসবেন

দুরপিন মঠ কালিম্পং শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে পৌঁছানোর জন্য বেশ কয়েকটি উপায় আছে:

 * গাড়ি/ট্যাক্সি: কালিম্পং শহর থেকে ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করে সহজেই দুরপিন মঠে পৌঁছানো যায়। এটি সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়।

 * ওয়াকিং/হাইকিং: যারা হাঁটতে পছন্দ করেন, তারা কালিম্পং শহর থেকে দুরপিন মঠ পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারেন। এটি একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা হতে পারে, কারণ পথে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

মঠটি দুরপিন দারা পাহাড়ের উপরে অবস্থিত, তাই রাস্তা কিছুটা চড়াই হতে পারে।

Scroll to Top