চমকটি / চিকা মসজিদ
মালদা জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান হলো চিকা মসজিদ। এটি গৌড় অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর স্থাপত্যশৈলী ও ইতিহাস পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
চিকা মসজিদ সম্পর্কে কিছু তথ্য:
* নামকরণ: ‘চিকা’ শব্দটি স্থানীয় ভাষায় ‘বাদুড়’ অর্থে ব্যবহৃত হয়। কথিত আছে, একসময় এই মসজিদে প্রচুর বাদুড় বাস করত, তাই এর নাম হয় চিকা মসজিদ। আবার, কেউ কেউ এর চকচকে মিনা করা ইটের উজ্জ্বলতার কারণে এর নাম ‘চামকান’ বা ‘চিকা’ হয়েছে বলে মনে করেন।
* নির্মাণকাল ও নির্মাতা: এটি ১৫শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্য অনুসারে, সুলতান ইউসুফ শাহ (১৪৭৫ খ্রিস্টাব্দে) অথবা নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ (১৪৩৫-১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে) এটি নির্মাণ করেছিলেন।


* স্থাপত্যশৈলী: চিকা মসজিদ একটি এক-গম্বুজবিশিষ্ট স্থাপত্য। এটি লাল ইঁট এবং পোড়ামাটির সূক্ষ্ম কারুকার্য দ্বারা নির্মিত। এর দেয়ালে ইসলামিক স্থাপত্যের পাশাপাশি হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যশৈলীর প্রভাবও দেখা যায়, যা এটিকে বিশেষভাবে অনন্য করে তুলেছে। যদিও এটিকে মসজিদ বলা হয়, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে এর ভেতরে কোনো মেহরাব না থাকায় এটি আসলে কোনো মসজিদ ছিল না, বরং এটি একটি মাজার বা কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হত।
* বর্তমান অবস্থা: বর্তমানে এটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দ্বারা সংরক্ষিত একটি ঐতিহাসিক স্থান।

ভ্রমণ টিপস:
* অবস্থান: চিকা মসজিদ মালদা জেলার গৌড় এলাকায় অবস্থিত, যা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি।
* দেখার সময়: মসজিদটি সারা বছর দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
* চিকা মসজিদ পরিদর্শনের সময় প্রচুর হাঁটাচলার প্রয়োজন হতে পারে, তাই আরামদায়ক জুতো পরা উচিত।
* কাছে খুব বেশি খাবারের দোকান নাও থাকতে পারে, তাই সঙ্গে পানীয় জল রাখা ভালো।
* ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের সময় এর পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
আপনি যদি ইতিহাস এবং স্থাপত্য ভালোবাসেন, তাহলে মালদার চিকা মসজিদ আপনার জন্য একটি দারুণ ভ্রমণ গন্তব্য হতে পারে।
কিভাবে এখানে আসবেন
মালদা শহর থেকে সহজেই সড়কপথে চিকা মসজিদে পৌঁছানো যায়। ট্যাক্সি, অটো বা রিকশা ভাড়া করে যাওয়া যেতে পারে।