বিহারীনাথ পাহাড়
বিহারীনাথ পাহাড় ভ্রমণ: প্রকৃতি, ধর্ম আর ট্রেকিং-এর এক অসাধারণ মেলবন্ধন
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো বিহারীনাথ পাহাড়। “বাংলার আরাকু ভ্যালি” নামে পরিচিত এই স্থানটি প্রকৃতিপ্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য। এখানে একদিকে ঘন জঙ্গল, অন্যদিকে দামোদর নদীর বয়ে চলা, আর তার মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিহারীনাথ পাহাড়।
কখন যাবেন:
বিহারীনাথ পাহাড়ের রূপ ঋতুভেদে পরিবর্তিত হয়।
* শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ): আবহাওয়া মনোরম থাকে, যা ট্রেকিং এবং


ঘোরার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
* বসন্তকালে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ): এই সময় পাহাড়ের চারপাশ লাল পলাশ আর শিমুল ফুলে ভরে ওঠে, যা এক মনোরম দৃশ্যের সৃষ্টি করে।
* বর্ষাকালে: বৃষ্টিতে সবুজে সবুজ হয়ে ওঠে চারিদিক। ভেজা পাহাড় আর ঝিরঝির বৃষ্টি প্রকৃতিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। এই সময়ে পাহাড়ের বেশ কিছু ঝর্ণা যেমন রামদা, সীতা ও লক্ষ্মণ ঝর্ণা পূর্ণতা পায়।
কী দেখবেন:
* বিহারীনাথ মন্দির: পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত একটি প্রাচীন শিব মন্দির। শিবরাত্রির সময় এখানে ভক্তদের ভিড় জমে।
* পাহাড় ও ট্রেকিং: বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ এই পাহাড়টি ট্রেকারদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার অভিজ্ঞতা দারুণ রোমাঞ্চকর।
* বন্যপ্রাণ: এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী দেখা যায়, যেমন শিয়াল, খরগোশ, বুনো শুয়োর, হায়না ইত্যাদি।
* আদিবাসী গ্রাম: পাহাড়বেড়া নামক একটি আদিবাসী গ্রাম এখানে রয়েছে, যেখানে মাটির বাড়ির দেওয়ালে আলপনা দেখতে পাওয়া যায়।
থাকার ব্যবস্থা:
বিহারীনাথের কাছে থাকার জন্য কিছু রিসর্ট ও গেস্ট হাউস রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বন উন্নয়ন সংস্থা (West Bengal State Forest Development Agency) এর গেস্ট হাউসে অনলাইনে বুকিং করা যায়।

Google Maps
কিভাবে এখানে আসবেন
* ট্রেনে: আসানসোল বা রানিগঞ্জ থেকে মধুকুণ্ড রেল স্টেশন যেতে পারেন। সেখান থেকে গাড়িতে বা অটোতে করে বিহারীনাথ পৌঁছানো যায়।
* সড়কপথে: কলকাতা থেকে গাড়িতে গেলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পানাগড়, দুর্গাপুর এবং রানিগঞ্জ পেরিয়ে দামোদর নদীর সেতু পার হয়ে মধুকুণ্ডের দিকে যেতে হবে। মধুকুণ্ড রেলক্রসিং পেরিয়ে ১৬ কিমি সোজা গেলেই বিহারীনাথ।