মতিঝিল পার্ক

মুর্শিদাবাদ জেলার একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হলো মতিঝিল পার্ক। এটি কেবল একটি বিনোদন পার্ক নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে বাংলার নবাবী আমলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস।
মতিঝিল পার্কের ইতিহাস
মতিঝিল নামটি এসেছে ‘মতি’ বা মুক্তো থেকে। কথিত আছে, নবাবী আমলে এই হ্রদে মুক্তার চাষ হতো, যা থেকে এর এমন নাম। এটি আসলে ভাগীরথী নদীর একটি পরিত্যক্ত অংশ, যা ঘোড়ার খুরের মতো দেখতে।
এই ঐতিহাসিক স্থানটি নবাব আলীবর্দী খানের জামাতা নওয়াজিশ মুহম্মদ খান নির্মাণ করেন। এখানে তিনি একটি প্রাসাদ এবং একটি মসজিদ তৈরি করেছিলেন। এই প্রাসাদে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার মাসি ঘসেটি বেগম থাকতেন এবং এই স্থানটি থেকেই তিনি নবাবের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করতেন বলে জানা যায়। ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের আগে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা এখানে তার সৈন্যদের ছাউনি স্থাপন করেছিলেন।
ভ্রমণের সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মতিঝিল ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়, কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে।
কী কী দেখবেন?
মতিঝিল পার্ক বর্তমানে একটি আধুনিক থিম পার্কে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে ইতিহাস এবং বিনোদন একসঙ্গে পাওয়া যায়।
* মতিঝিল মসজিদ (কালা মসজিদ): এই প্রাচীন মসজিদটি এখনো অক্ষত আছে। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত সুন্দর এবং দেখতে অনেকটা পাথরের তৈরি বলে একে ‘সাঙ্গ-ই-দালান’ বা ‘পাথরের প্রাসাদ’ বলেও ডাকা হতো।
* হ্রদ এবং বোটিং: পার্কের মূল আকর্ষণ হলো বিশাল হ্রদটি। এখানে বোটিং করার ব্যবস্থা রয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়।
* লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো: সন্ধ্যায় এখানে বাংলার ইতিহাস ও নবাবী আমলের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো অনুষ্ঠিত হয়। এটি খুবই শিক্ষামূলক ও আকর্ষণীয়।
* অন্যান্য বিনোদন: পার্কে শিশুদের জন্য খেলার ব্যবস্থা, টয় ট্রেন, সুন্দর বাগান, মিউজিক্যাল ফাউন্টেন এবং সুদৃশ্য পথ রয়েছে।


Google Maps
কিভাবে এখানে আসবেন
* ট্রেন: মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে স্টেশন থেকে মতিঝিল পার্কের দূরত্ব খুব কম। স্টেশন থেকে টোটো বা রিকশা ভাড়া করে সহজেই পৌঁছানো যায়।
* সড়কপথ: কলকাতা থেকে বাস বা নিজের গাড়িতে করে সরাসরি মুর্শিদাবাদ যাওয়া যায়।