রাজা ভাত খাওয়া
রাজাভাতখাওয়া, পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার বুকসা টাইগার রিজার্ভের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি ছোট্ট কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্থান, যা দোয়ার্স অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই স্থানের নামের পেছনে এক ঐতিহাসিক কিংবদন্তি রয়েছে—জনশ্রুতি অনুযায়ী, কুচবিহারের রাজা একবার ভুটানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করে এই অঞ্চলে ফিরে এসে এখানেই ভোজ সেরেছিলেন, সেই থেকেই নাম হয় “রাজাভাতখাওয়া”, যার অর্থ “যেখানে রাজা ভাত খেয়েছিলেন”। চারপাশে ঘন সবুজ শাল ও সেগুনের বন, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নদী, যেমন—রাইডাক ও জয়ন্তী নদীর কলকল শব্দ, আর বনজ


জীববৈচিত্র্যের সমাহারে রাজাভাতখাওয়া এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এখানে ৩০০-র বেশি প্রজাতির পাখি দেখা যায়, যার মধ্যে কিছু বিরল ও অভিবাসী প্রজাতিও রয়েছে, ফলে এটি পক্ষিপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গস্বরূপ। রাজাভাতখাওয়া বুকসা জঙ্গল অভিযানের প্রধান প্রবেশদ্বার হওয়ায় বহু পর্যটক এখানে আসেন বুকসা দুর্গ, লেপচাখা, সনটালাবাড়ি, চিলাপাতা কিংবা রোভার্স পয়েন্ট ট্রেক করার উদ্দেশ্যে। স্থানীয় নেচার ইন্টারপ্রেটেশন সেন্টার বুকসা রিজার্ভে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করে এবং দর্শনার্থীদের জন্য এখানকার গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর ওপর একটি
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রদান করে। হাতি, চিতা, বাঘ, গাউর, হরিণ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী দেখা যায় এখানকার বনাঞ্চলে। পাশাপাশি, রাজাভাতখাওয়ার শান্ত পরিবেশ, ছোট্ট রেলস্টেশন, বন বিভাগের রেস্ট হাউস, কাঠের কটেজ ও স্থানীয় লোকজ সংস্কৃতি মিলিয়ে এটি এক পরিপূর্ণ প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। যারা শহরের কোলাহল থেকে দূরে কিছুদিন প্রকৃতির কোলে কাটাতে চান, তাঁদের জন্য রাজাভাতখাওয়া একটি আদর্শ স্থান।
কিভাবে এখানে আসবেন
1. আপনি যদি প্লেনে আসেন তাহলে আপনার নিকটবর্তী এয়ারপোর্ট হল বাগডোগরা এয়ারপোর্ট (IXB) যেটি শিলিগুড়িতে অবস্থিত |
2. আপনি যদি ট্রেনে আসেন তাহলে আপনার নিকটবর্তী রেল স্টেশন হল Alipurduar Jn.
3. আপনি নিজস্ব বা প্রাইভেট গাড়িতে করে শিলিগুড়ি, কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ার হয়ে সরাসরি এখানে পৌছতে পারবেন |
