ফিরোজ মিনার
মালদা জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক স্থান হলো ফিরোজ মিনার। এটি ১৪৮৫ থেকে ১৪৮৯ সালের মধ্যে হাবশি রাজবংশের সুলতান সাইফউদ্দিন ফিরোজ শাহ কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। অনেক সময় একে দিল্লির কুতুব মিনারের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
ফিরোজ মিনার সম্পর্কে কিছু তথ্য:
* গঠনশৈলী: এই মিনারটি পাঁচতলা বিশিষ্ট। প্রথম তিনটি তলা বহুভুজাকার এবং ওপরের দুটি তলা গোলাকার। এটি ২৬ মিটার (৮৫ ফুট) উঁচু এবং এর পরিধি ১৯ মিটার (৬২ ফুট)। মিনারের ভেতরে সর্পিল ৭৩ ধাপের সিঁড়ি রয়েছে যা চূড়ায় পৌঁছায়। মিনারের দেয়ালগুলিতে টেরাকোটার চমৎকার কাজ রয়েছে এবং এর নির্মাণশৈলীতে তুঘলকি স্থাপত্যের প্রভাব দেখা যায়। পূর্বে এর ওপরের তলায় একটি গম্বুজ ছিল, যা এখন সমতল ছাদ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে।


* ঐতিহাসিক গুরুত্ব: ফিরোজ মিনার সুলতান ফিরোজ শাহের কোনো যুদ্ধবিজয়ের স্মারক হিসেবে নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘পীর আশা মন্দির’ বা ‘চিরাগ দানি’ নামেও পরিচিত।
প্রবেশ মূল্য ও সময়:
* প্রবেশ মূল্য: প্রবেশ মূল্য সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, এটি প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং সাধারণত এমন ঐতিহাসিক স্থানগুলিতে অল্প প্রবেশ মূল্য থাকে বা বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার থাকে।
* খোলার সময়: সাধারণত সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে।
ভ্রমণের টিপস:
* অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: মালদা ভ্রমণে ফিরোজ মিনার ছাড়াও আরও অনেক ঐতিহাসিক স্থান যেমন – দাখিল দরওয়াজা, বারো দুয়ারী, চিকা মসজিদ, আদিনা মসজিদ, একলাখী সমাধি ইত্যাদি ঘুরে দেখতে পারেন।
* সময়: মিনারটির চূড়ায় আরোহণ করে গৌড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
* সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মালদা ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়, কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে।
মালদা একটি সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক জেলা। ফিরোজ মিনার পরিদর্শনের মাধ্যমে আপনি বাংলার এক গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারবেন।

কিভাবে এখানে আসবেন
ফিরোজ মিনার মালদা শহরের গৌড় অঞ্চলে অবস্থিত। মালদা শহর থেকে সহজেই বাস, অটো বা ট্যাক্সি করে গৌড়ে পৌঁছানো যায়। এটি গৌড়ের নগর দুর্গের বাইরে অবস্থিত এবং দাখিল দরওয়াজা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে।