জাহানকোষা কামান

মুর্শিদাবাদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো জাহানকোষা কামান। এটি ইতিহাসের এক অসাধারণ নিদর্শন। এখানে ভ্রমণের জন্য বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

জাহানকোষা কামান: কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

 * নাম: জাহানকোষা শব্দের অর্থ হলো ‘পৃথিবী ধ্বংসকারী’।

 * নির্মাণ: এটি মুঘল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে এবং বাংলার সুবাহদার ইসলাম খাঁর তত্ত্বাবধানে ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বিখ্যাত কামার জনার্দন কর্মকার এটি তৈরি করেন।

 * উপাদান: এটি অষ্টধাতু (সোনা, রূপা, লোহা, দস্তা, তামা, টিন, সীসা এবং পারদ) দিয়ে তৈরি। এই কারণে শত শত বছর পরেও এটিতে মরচে ধরেনি।

 * আকার ও ওজন: কামানটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ ফুট ৬ ইঞ্চি, পরিধি ৫ ফুট এবং ওজন প্রায় ৭ টন।

 * অবস্থান: এটি মুর্শিদাবাদের কাটরার দক্ষিণ-পূর্বে তোপখানায় অবস্থিত।

ভ্রমণের বিস্তারিত

 * প্রবেশ মূল্য: জাহানকোষা কামান দেখতে কোনো প্রবেশ মূল্য লাগে না। এটি একটি খোলা জায়গায় স্থাপন করা আছে।

 * দর্শন: কামানটি একটি উঁচু বেদীর উপর রাখা আছে এবং পর্যটকরা এটি খুব কাছ থেকে দেখতে ও স্পর্শ করতে পারেন। এটি দেখতে মাত্র ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে।

 * অন্যান্য আকর্ষণ: জাহানকোষা কামান কাটরার তোপখানা এলাকায় অবস্থিত, যেখানে কাতরা মসজিদ খুব কাছেই রয়েছে। তাই কামান দেখার পাশাপাশি কাতরা মসজিদ ও কদম শরীফ মসজিদও ঘুরে আসতে পারেন।

 * ভ্রমণের সেরা সময়: মুর্শিদাবাদ ভ্রমণের সেরা সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে এবং ঘোরার জন্য আরামদায়ক হয়।

কিছু টিপস

 * মুর্শিদাবাদে টোটো বা অটোচালককে সরাসরি জাহানকোষা কামান বললে অনেক সময় তারা নাও চিনতে পারে। তাই ‘তোপখানা’ বা ‘কাতরা মসজিদ’ বলে জিজ্ঞাসা করলে সহজে পৌঁছানো যায়।

 * মুর্শিদাবাদের অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান যেমন হাজারদুয়ারি প্যালেস, নিজামত ইমাবারা, খোশবাগ ইত্যাদিও একদিনের মধ্যে ঘুরে দেখা সম্ভব। তাই আপনি আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী সবগুলি স্থান একসাথে ঘুরে দেখতে পারেন।

 * স্থানীয় একজন গাইড ভাড়া করলে প্রতিটি স্থানের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

Google Maps

কিভাবে এখানে আসবেন

 * কলকাতা থেকে: আপনি সড়কপথে অথবা ট্রেনে মুর্শিদাবাদে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার।

   * ট্রেনে: কলকাতা (হাওড়া বা শিয়ালদহ) থেকে মুর্শিদাবাদের জন্য নিয়মিত ট্রেন পরিষেবা রয়েছে। হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস বা ভাগীরথী এক্সপ্রেস-এর মতো ট্রেনগুলিতে যাতায়াত করা সুবিধাজনক।

   * সড়কপথে: কলকাতা থেকে বাসে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে পারেন। মুর্শিদাবাদ পৌঁছানোর পর স্থানীয় যানবাহনে (টোটো বা রিকশা) করে জাহানকোষা কামান পর্যন্ত পৌঁছানো যায়।

 * মুর্শিদাবাদে পৌঁছানোর পর: মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে স্টেশন থেকে জাহানকোষা কামান প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্টেশন থেকে টোটো বা অটো ভাড়া করে সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়।

Scroll to Top