কদম রসুল মসজিদ

মালদার কদম রসুল মসজিদ একটি অত্যন্ত ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি গৌড়ে অবস্থিত, যা একসময় বাংলার রাজধানী ছিল। এই মসজিদটি তার স্থাপত্য এবং ধর্মীয় গুরুত্বের জন্য পরিচিত।

কদম রসুল মসজিদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

 * নির্মাণকাল: ১৫৩০-১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে সুলতান নাসিরুদ্দিন নসরত শাহ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।

 * নামকরণ: ‘কদম রসুল’ শব্দের অর্থ ‘রাসূলের পদচিহ্ন’। কথিত আছে, এই মসজিদে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পায়ের ছাপ সম্বলিত একটি পাথরের ফলক রাখা হয়েছিল। এই ফলকটি প্রথমে পাণ্ডুয়ায় ছিল, পরে সুলতান হুসেন শাহ এটিকে গৌড়ে নিয়ে আসেন এবং তাঁর পুত্র নসরত শাহ মসজিদ নির্মাণ করে সেখানে স্থাপন করেন। যদিও বর্তমানে এই পদচিহ্ন মহদিপুরে একজন খাদেমের কাছে সংরক্ষিত আছে বলে জানা যায়।

 * স্থাপত্য: মসজিদটি এক-গম্বুজবিশিষ্ট এবং এর চার কোণে চারটি কালো মার্বেলের চূড়া ছিল, যার মধ্যে বর্তমানে তিনটি অবশিষ্ট আছে। এর স্থাপত্যে ইসলামিক এবং বাংলা স্থাপত্যশৈলীর একটি সুন্দর মিশ্রণ দেখা যায়। মসজিদের সামনে ফতেহ খানের সমাধি রয়েছে, যা বাংলার দোচালা কুঁড়েঘরের অনুকরণে নির্মিত।

ভ্রমণ টিপস

 * অবস্থান: এটি মালদা জেলার গৌড়ে অবস্থিত। গৌড় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা জেলা এবং বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত।

 * ভ্রমণের সেরা সময়: কদম রসুল মসজিদ পরিদর্শনের জন্য নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে এবং গরম ও আর্দ্রতার সমস্যা থাকে না।

 * সময়: সাধারণত ১-২ ঘণ্টা সময় নিয়ে এই মসজিদ এবং এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়। এটি সকাল ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

 * পোশাক: যেহেতু এটি একটি ধর্মীয় স্থান, তাই শালীন পোশাক পরা উচিত।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

 * মসজিদ চত্বরটি শান্ত ও শান্তিপূর্ণ। এখানে ফটোগ্রাফি করা যায়।

 * মসজিদের প্রবেশে কোনো ফি লাগে না।

 * স্থানীয়রা বা মসজিদের কর্মীরা মসজিদের ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন।

মালদা ভ্রমণ একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা হতে পারে, বিশেষ করে গৌড়ের এই প্রাচীন স্থাপনাগুলি দেখে।

Google Maps

কিভাবে এখানে আসবেন

   * ট্রেন: নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হলো মালদা টাউন, যা গৌড় থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মালদা টাউন স্টেশন থেকে স্থানীয় বাস, অটো-রিকশা বা ট্যাক্সিতে করে কদম রসুল মসজিদে পৌঁছানো যায়।

   * সড়ক পথ: কলকাতা থেকে সড়ক পথেও মালদা পৌঁছানো যায়। গৌড় মালদা শহরের প্রায় ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।

Scroll to Top