মহাকাল শিব মন্দির
দার্জিলিং-এর মহাকাল শিব মন্দির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র স্থান, যেখানে হিন্দু ও বৌদ্ধ উভয় ধর্মাবলম্বীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করেন। এটি অবজারভেটরি হিলের উপরে অবস্থিত এবং দার্জিলিং মলের ঠিক পিছনেই এর অবস্থান।
ইতিহাস:
* এই মন্দিরের স্থানে পূর্বে ‘দোর্জে-লিং’ নামে একটি বৌদ্ধ মঠ ছিল, যা লামা দোর্জে রিনজিং ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন।
* জনশ্রুতি আছে যে ‘দোর্জে-লিং’ থেকেই ‘দার্জিলিং’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।
* ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে গোর্খা আক্রমণের সময় বৌদ্ধ মঠটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরবর্তীতে এই স্থানে মহাকাল মন্দির নির্মিত হয়।
* এই মন্দিরে হিন্দু দেবতা শিব (মহাকাল রূপ), মা কালী, হনুমান, গণেশ এবং ভগবান বুদ্ধ – সকলেই পূজিত হন। মন্দিরের গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গের পাশেই বুদ্ধদেবের


মূর্তি রয়েছে, যা হিন্দু-বৌদ্ধ সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
* মনে করা হয়, ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে তিনটি শিবলিঙ্গ (ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর রূপে) এই স্থানে স্বয়ম্ভু রূপে আবির্ভূত হয়েছিল।
বৈশিষ্ট্য:
* মন্দিরের চারপাশে শত শত রঙিন প্রার্থনা পতাকা এবং ঘণ্টা দেখা যায়, যা একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক পরিবেশ সৃষ্টি করে।
* মন্দির প্রাঙ্গণে একজন হিন্দু পুরোহিত এবং একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী উভয় ধর্মীয় আচার পালন করেন এবং একসাথে প্রার্থনা করেন।

* মহাশিবরাত্রি এবং বুদ্ধ পূর্ণিমা এখানে অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে পালিত হয়।
পরিদর্শনের সময়:
* মহাকাল মন্দির প্রতিদিন সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭:৩০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
* এখানে প্রবেশে কোনো টিকিটের প্রয়োজন হয় না।
* পর্যটকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান এবং দার্জিলিং-এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
দার্জিলিং গেলে মহাকাল মন্দির দর্শন করা আপনার জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
Google Maps
কিভাবে এখানে আসবেন
দার্জিলিং মল রোড থেকে হেঁটে সহজেই মন্দিরে পৌঁছানো যায়। এটি ম্যাল রোডের পাশ দিয়ে কিছুটা চড়াই পথে হেঁটে যেতে হয়। ট্যাক্সি বা অন্য কোনো যানবাহন এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না, তাই হেঁটে যাওয়াটাই একমাত্র উপায়।