ইমামবাড়া

মুর্শিদাবাদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো নিজামত ইমামবাড়া। এটি ভারতের বৃহত্তম ইমামবাড়াগুলির মধ্যে অন্যতম। মুর্শিদাবাদ ভ্রমণে গেলে এটি আপনার তালিকার শীর্ষে থাকা উচিত। এই ভ্রমণ নির্দেশিকায় নিজামত ইমামবাড়ার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
নিজামত ইমামবাড়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
* প্রতিষ্ঠাতা: বর্তমান নিজামত ইমামবাড়াটি নবাব মনসুর আলি খান কর্তৃক ১৮৪৭ সালে নির্মিত হয়।
* পূর্ব ইতিহাস: এর আগে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এখানে একটি ইমামবাড়া তৈরি করেছিলেন, যা দুটি অগ্নিকাণ্ডে (১৮৪২ এবং ১৮৪৬ সালে) ধ্বংস হয়ে যায়।
* স্থাপত্য: এটি প্রায় ৬০০ ফুট লম্বা একটি অসাধারণ স্থাপত্য। এর ভেতরে তিনটি বিশাল চত্বর, সুন্দর খিলান এবং চীনা টাইলস দ্বারা সজ্জিত মেঝে রয়েছে।
বিশাল চত্বর, সুন্দর খিলান এবং চীনা টাইলস দ্বারা সজ্জিত মেঝে রয়েছে।
ভ্রমণের সেরা সময়
মুর্শিদাবাদ ভ্রমণের সেরা সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এই সময়ে আবহাওয়া মনোরম থাকে এবং পর্যটকদের জন্য আরামদায়ক হয়।
প্রবেশ এবং সময়সূচী
* নিজামত ইমামবাড়ার প্রবেশ পথটি সাধারণত হাজারদুয়ারী প্যালেস কমপ্লেক্সের মধ্যেই অবস্থিত। হাজারদুয়ারী প্যালেস এবং এর আশেপাশে থাকা অন্যান্য দর্শনীয় স্থান ঘোরার জন্য একটি সম্মিলিত টিকিট কাটা যায়।
* তবে, ইমামবাড়ার ভেতরে সাধারণত দর্শকদের প্রবেশাধিকার সীমিত। এটি কেবল মহরমের সময় ১০ দিনের জন্য খোলা হয়। তাই, যদি আপনি এর অভ্যন্তর দেখতে চান, তবে আপনাকে মহরমের সময় ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে হবে।


ইমামবাড়ার মূল আকর্ষণ
* স্থাপত্যশৈলী: এর সাদা রঙের বিশাল কাঠামো এবং ইসলামিক ও ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ মুগ্ধ করার মতো। এর ভেতরের হলরুমগুলি বিশাল আকারের এবং ছাদে ঝাড়বাতি দিয়ে সজ্জিত।
* মাদিনা মসজিদ: ইমামবাড়ার ঠিক সামনে একটি ছোট মসজিদ রয়েছে, যা মাদিনা মসজিদ নামে পরিচিত। এটি নবাব সিরাজউদ্দৌলা নির্মিত মূল ইমামবাড়ার একমাত্র অবশিষ্ট অংশ। কথিত আছে, এর ভিত্তি মক্কা থেকে আনা পবিত্র মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
* তোপখানা: ইমামবাড়া এবং হাজারদুয়ারী প্যালেসের মাঝে একটি বিশাল কামান রয়েছে, যা বাচ্চেওয়ালি তোপ নামে পরিচিত। এটিও এখানকার একটি প্রধান আকর্ষণ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
* ইমামবাড়ার ভেতরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখা জরুরি।
* ফটোগ্রাফি করার সময় কর্তৃপক্ষের নিয়ম মেনে চলুন।
* হাজারদুয়ারী প্যালেস ও অন্যান্য স্থান একসাথে ঘোরার পরিকল্পনা করলে পুরো দিনের সময় হাতে রাখুন।
Google Maps
কিভাবে এখানে আসবেন
* রেলপথে: নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে স্টেশন। এটি ভারতের বিভিন্ন বড় শহরের সাথে রেলপথে সংযুক্ত। স্টেশন থেকে ট্যাক্সি বা অটো রিকশা করে ইমামবাড়ায় পৌঁছানো যায়।
* সড়কপথে: কলকাতা, বর্ধমান, বোলপুর, মালদা, কৃষ্ণনগর ইত্যাদি শহর থেকে মুর্শিদাবাদের বাস পরিষেবা রয়েছে।
* আকাশপথে: নিকটতম বিমানবন্দর হলো কলকাতা (নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর), যা মুর্শিদাবাদ থেকে প্রায় ১৯৫ কিমি দূরে অবস্থিত। বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে মুর্শিদাবাদে যাওয়া যায়।