সালামি বা দাখিল দরওয়াজা

মালদার “সালামি দরওয়াজা” আসলে দাখিল দরওয়াজা (Dakhil Darwaza) নামেই বেশি পরিচিত, এবং এটি মালদা জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। এটি গৌড় শহরের প্রবেশদ্বার হিসেবে নির্মিত হয়েছিল এবং এর ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্ব অপরিসীম।
সালামি দরওয়াজা (দাখিল দরওয়াজা) সম্পর্কে কিছু তথ্য:
* ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: ১৫শ শতাব্দীতে সুলতান বারবাক শাহ এটি নির্মাণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। এটি প্রাচীন গৌড় শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহৃত হত। এর নাম “সালামি দরওয়াজা” হয়েছে কারণ একসময় এখান থেকে কামান দেগে সালাম জানানো হত।

* স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্য: দাখিল দরওয়াজা পশ্চিমবঙ্গের ইটের তৈরি স্থাপত্যের এক চমৎকার উদাহরণ। এটি লাল ইটের তৈরি এবং এতে পোড়ামাটির সুন্দর কাজ (terracotta work) দেখা যায়। এর উচ্চতা ২১ মিটারের বেশি এবং প্রস্থ ৩৪.৫ মিটার। গেটের চারটি কোণে পাঁচটি তলা বিশিষ্ট টাওয়ার রয়েছে।

 * অবস্থান: এটি মালদা শহরের প্রায় ১২-১৩ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত প্রাচীন গৌড় শহরে।

 * গুরুত্ব: এটি শুধুমাত্র একটি প্রবেশদ্বার ছিল না, বরং গৌড় দুর্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এই গেটের মাধ্যমে সেই সময়ের সামরিক কৌশল এবং স্থাপত্য শৈলীর পরিচয় পাওয়া যায়।

মালদা ভ্রমণে সালামি দরওয়াজা দেখার জন্য টিপস:

 * ভ্রমণের সেরা সময়: শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ) মালদা ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়, কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে। গরমকালে (মে-জুন) তাপমাত্রা অনেক বেশি হতে পারে।

 * থাকার ব্যবস্থা: মালদা শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন হোটেল এবং লজ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন (WBTDC) এর পর্যটন লজও পাওয়া যায়।

দাখিল দরওয়াজা বা সালামি দরওয়াজা মালদার সমৃদ্ধ ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। এখানে গেলে আপনি প্রাচীন বাংলার গৌরবময় অতীতের এক ঝলক দেখতে পাবেন।

কিভাবে এখানে আসবেন

   * ট্রেন: মালদা টাউন রেলওয়ে স্টেশন ভারতের বিভিন্ন প্রধান শহরের সাথে সংযুক্ত। স্টেশন থেকে দাখিল দরওয়াজায় পৌঁছানোর জন্য গাড়ি বা অটো রিকশা ভাড়া করতে পারেন।

   * সড়ক পথ: মালদা শহর সড়কপথেও ভালো ভাবে সংযুক্ত। কলকাতা থেকে বাসের মাধ্যমে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে পারেন। দাখিল দরওয়াজা মালদা শহর থেকে প্রায় ১২-১৩ কিমি দূরে অবস্থিত।

Google Maps

Scroll to Top