সোনাঝুরি হাট
সোনাঝুরি হাট, যা “খোয়াই হাট” নামেও পরিচিত, শান্তিনিকেতনের অন্যতম জনপ্রিয় আকর্ষণ। এটি শুধু একটি বাজার নয়, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি ও শিল্পের একটি জীবন্ত প্রদর্শনী।
সোনাঝুরি হাটের বিশেষত্ব
* হস্তশিল্প ও কারুশিল্প: এই হাটের প্রধান আকর্ষণ হলো স্থানীয় শিল্পীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প। এখানে আপনি পাবেন পটচিত্র, মাটির পাত্র, কাঠের কাজ, বাটিক প্রিন্টের পোশাক, কাঁথা স্টিচের শাড়ি, চামড়ার ব্যাগ, হাতে তৈরি গহনা, টেরাকোটার জিনিস এবং আরও অনেক কিছু।
* আদিবাসী সংস্কৃতি: সোনাঝুরি হাটে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার এক ঝলক দেখা যায়। প্রায়শই এখানে আদিবাসী নৃত্য ও বাউল গান পরিবেশিত হয়, যা পর্যটকদের মন মুগ্ধ করে তোলে।


* প্রাকৃতিক পরিবেশ: খোয়াই নদীর তীরে, সোনাঝুরি গাছের নিচেই এই হাট বসে। এর চারপাশের লাল মাটির খোয়াই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হাটের পরিবেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
হাটের সময়সূচী
আগে সোনাঝুরি হাট শুধুমাত্র শনি ও রবিবার বসতো। তবে বর্তমানে এটি শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত খোলা থাকে। অন্যান্য দিনগুলোতে (মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি) বন বিভাগের পক্ষ থেকে জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং গাছ লাগানোর কাজ চলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
* এখানে জিনিসপত্রের দামদর করার সুযোগ থাকে, তাই দর কষাকষি করে কিনলে ভালো দামে পছন্দের জিনিস পেতে পারেন।
* বিশেষ করে ছুটির দিনে হাটে অনেক ভিড় হয়।
* হাটের আশেপাশে অনেক ছোট খাবারের দোকানও দেখতে পাবেন, যেখানে স্থানীয় খাবার চেখে দেখতে পারেন।
সোনাঝুরি হাট শান্তিনিকেতন ভ্রমণের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা আপনাকে বাংলার গ্রামীণ শিল্প ও সংস্কৃতির এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে।

কিভাবে এখানে আসবেন
সোনাঝুরি হাট শান্তিনিকেতনের কাছেই অবস্থিত। শান্তিনিকেতন থেকে এটি প্রায় ১.৫ কিলোমিটার দূরে। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হলো প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন। কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই হাটে আপনি ট্রেন বা সড়কপথে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন। শান্তিনিকেতনে পৌঁছে স্থানীয় টোটো বা অটো করে হাটে যাওয়া যায়।