শুশুনিয়া পাহাড়

শুশুনিয়া পাহাড় ভ্রমণ একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। এটি শুধু একটি পাহাড় নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস, প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এখানে ভ্রমণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
শুশুনিয়া পাহাড়ের কিছু বিশেষত্ব
ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব: শুশুনিয়া পাহাড়ে চতুর্থ শতকে খোদিত রাজা চন্দ্রবর্মণের শিলালিপি রয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে প্রাচীন শিলালিপি হিসেবে পরিচিত। এই পাহাড়ের আশেপাশে সিংহ, জিরাফ ও হায়নার মতো অনেক প্রাচীন প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: প্রায় ১২০০ ফুট উচ্চতার এই পাহাড়টি শাল, পলাশ ও মহুয়া গাছের জঙ্গলে ঘেরা। পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে বয়ে গেছে গন্ধেশ্বরী নদী।
বসন্তকালে পলাশের আগুনরঙা ফুল এখানকার দৃশ্যকে আরও মনোরম করে তোলে।
ধর্মীয় ও স্থানীয় সংস্কৃতি: পাহাড়ের নিচে একটি প্রাচীন নরসিংহ মূর্তি রয়েছে, যার পাশ থেকে একটি ঝর্ণার জল প্রবাহিত হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই জলের ঔষধি গুণ আছে। শুশুনিয়া গ্রামের পাথর খোদাই শিল্প খুবই বিখ্যাত, যা আপনি পাহাড়ের নিচের দোকানে দেখতে ও কিনতে পারবেন।
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস: যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তাদের জন্য শুশুনিয়া একটি দারুণ জায়গা। এখানে রক ক্লাইম্বিং বা পর্বতারোহণের ব্যবস্থা রয়েছে।
কোথায় থাকবেন?
শুশুনিয়া পাহাড়ের আশেপাশে কিছু ছোট হোটেল, কটেজ এবং হোমস্টে আছে।


এছাড়া, বাঁকুড়া শহরে থাকার অনেক ভালো ব্যবস্থা আছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের নিজস্ব বিষ্ণুপুর ট্যুরিজম প্রপার্টি (পূর্বতন বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজ) শুশুনিয়া থেকে প্রায় ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত।
কখন যাবেন?
শুশুনিয়া ভ্রমণের সেরা সময় হলো শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি)। এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে। গরমকালে এই অঞ্চলে অনেক বেশি গরম পড়ে, তাই তখন ভ্রমণ এড়িয়ে চলা ভালো।
আপনি যদি প্রকৃতি, ইতিহাস এবং অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তাহলে শুশুনিয়া পাহাড় ভ্রমণ আপনার জন্য একটি দারুণ গন্তব্য হতে পারে।
কিভাবে এখানে আসবেন
রেলপথে: হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে করে বাঁকুড়া বা ছাতনা স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে অটো বা বাসে করে শুশুনিয়া পৌঁছানো যায়।
সড়কপথে: কলকাতা থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মেজিয়া সেতু পার হয়ে শুশুনিয়া পৌঁছানো যায়। ব্যক্তিগত গাড়িতে গেলে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে।